দাগ || মাধুরী লোধ
খুন্তি নাড়ার শব্দ আসছে ভাড়াটেদের রান্না ঘর থেকে । উৎকর্ণ হয়ে উঠে আমার কান । আমি বাড়ির মালিক আর রাঁধুনী জেলের মেয়ে একথা এখন মনে দাগ কাটে না ।জিভে জল আনা রান্নার স্বাদের সাথে যৌবনবতী নিটোল স্বাস্থ্যের অধিকারীনী রাঁধুনী কানন এর দেহ টা চোখে ভাসে । জানালার ফাঁকে যেটুকু দেখা যায় উনুনের আঁচে পাকা যজ্ঞ ডুমুরের মত লাল হয়ে উঠলো তার ঠোঁট ।পাকা পেয়ারার মতো হলুদ চামড়ার রক্ত যেন টকটক করছে । আমি বহুদিন ভেবেছি জেলে কন্যার চামড়ার রঙ নিয়ে । সাধারনত ওরা কৃষ্ণাঙ্গ হয় । হাজারো কৃষ্ণাঙ্গের মধ্যে একজন ধুতি পরা বাঙ্গালীর মতো ও স্ব মহিমায় দাবড়ে বেড়াচ্ছে ।
মান সম্মান আত্ম মর্যাদা কুল ত্যগের ভয়ে ওর সাথে কথা বলা হয়নি ।ওর চোখ দুটো যেন মুকতা বাহী সাবধানী ঝিনুক ।খোপা দেখে মনে হয় চুলের পাহাড় । সাধারণ আটপৌরে শাড়ি তে ওর লাবন্য বিচ্ছোরিত হচ্ছে । সাউথ ইন্ডিয়ান শাড়ি জড়োয়া গহনা পড়ে যদি আমার স্ত্রীর মতো সেজে গুজে থাকতো জানিনা আরো কতো পুরুষ কে আত্ম হত্যায় মনোযোগী করতো ==এর মাঝে আমার নাম স্্খ্যায় জুড়ে দিলে হয়তো ভুল হতো না ।
আমার স্ত্রীর বারো মাসে তেরো পার্বণ এর মতো গাটে গাটে রোগ । ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন আর ঔষধের নিত্য নতুন ফিরিস্তি শুনে আমার মাস্টার ডিগ্রী ধারী মনটা মাঝে মাঝে বিষিয়ে উঠে ।এর মানে কি স্্সার /বৌ কি উকুন বা ছাড়পোকার মতো সারাজীবন কামড়ে যাবে /এসব কথা ভাবতে ভাবতে আমি করমচা খাবার মতো মুখ বেঁকিয়ে উঠি ।রোজ নিমপাতা চিবিয়ে খেলেও বিরক্তি আসবে না । আমাকে সঙ্গ দিতে অক্ষম আমার বৌ কড়া নজরদারি রাখে ।যদিও আমাকে বুঝতে দেয় না ।কানন এ বাড়িতে মাষ্টার মশাই দের রান্নার চাকুরী পাবার পর একথা বারে বারে মনে হয় বৌ নামী চিররোগা ,ক্ষীনকায়া মহিলাটি আমার সব আশা ভরসা চুষে নিয়ে আমাকে দারুন ভাবে ঠকিয়েছে ।
কি সব আবোল তাবোল ভাবছি । সোনার ফ্রেমে বাঁধানো চশমার কাঁচ এ ঝলসে উঠে ভোরের সূর্য কিরন । মাস্টার মশাই দের হাসি হুল্লোড় শোনা যাচ্ছে ।তার সঙ্গে কাননের ডালে মরিচ পোড়া আর পাঁচফোড়ন সম্ভার দেবার ঘ্রাণ । আমার বুকের ফ্রিজে রাবার এর মতো হৃৎপিণ্ড হঠাৎ করে টুং টুং ঠা্্ ঠা্্ আওয়াজ করে আদিম কাঁপুনি শুরু হয় । বৌকে কোথাও দেখলাম না । হয়তো ঠিকা ঝিএর খুত ধরে থালা বাসন পিটাচ্ছে ।নিজে যা করুক না কেন অন্যের খুঁত ধরতে ওস্তাদ সে ।
আমার মনে চৈত্রের ক্ষরা । জৈষ্ঠ্যের বন্ধ তাই অনন্ত অবসর । ইস্কুলে গিয়ে যেটুকু সময় কাটাতে পারতাম তা আর হচ্ছে না ।বৌ আমার ছেলে মেয়ে কে নিয়ে বাপের বাড়ি গেছে জৈষ্ঠভোজন করতে আমি বোতলে গজানো চারা গাছের শিকড়ের মতো থমকে আছি । ভাগ্যিস মাস্টার মশাই দের সাথে দুজন ব্যঙকের স্টাফ ছিলো । মাস্টার মশাই রা ছুটিতে গেলে ঐ দুজন বাবুর জন্য কানন কে বাধা ডিউটি সারতে আসতে হয় কাকভোরে । স্বপাক খাবার বন্দোবস্ত করে দিয়ে গেছে আমার বৌ রুবী । চারদিনের জল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব কিছুর ।আলনা গুছাতে পারবো না বলে অর্ধেক তুলে রেখে গেছে আলমারি তে অর্ধেক সুটকেসে ।ঠিকা ঝি বাসন মেজে ঘরদোর মুছবে , উঠোন ঝাঁট দেবে । আমি থাকবো কর্মহীন অলস একটা জীব ।হাটে বাজারে তাস খেলা পছন্দ করি না , নিজের বাড়িতে যা একটু আসর বসে তা রাত আটটার পর ।আর সারা দিন আমি থাকি পাকের কেঁচোর মতো কুনো হয়ে ।মুত্রত্যাগ ,মল ত্যাগ বা স্নানের প্রয়োজন না হলে আমি অআ সূর্য স্পর্শা হয়ে থাকতাম ।
নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি ।বৌ ছেলে ফিরতে দুদিন বাকি ।ব্য্্ক বাবুরা মফস্বল গেছেন । ফিরতে অন্তত এগারোটা ।মাছ ভাজার গন্ধ আসছে ভাড়াটেদের ঘর থেকে । আমাদের ঠিকে ঝি একটার পর একটা বাসনের কালি তুলে অর্ধেক নিজের কাপড়ে মেখে অফিস যাত্রীর মতো ঘড়ি ধরা কাজ করে দশ বাড়ির বৌ ঝি দের ফাই ফরমাশ খেটে হয়তো বাড়ি ফিরে উনুনে আঁচ দিয়ে খাবার তৈরি করছে বাড়ির ছেলে মেয়ে দের জন্য ।
আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম চেয়ার ছেড়ে । নিজের বাড়ির বাগানে প্রথম গোলাপ ফোটার আনন্দ উৎফুল্লতা আমার মনে । রাঁধুনি কানন এর দেহের আকর্ষণ আমাকে কামানধ করছে বারবার । আমার বাড়ি থেকে দশ বিঘা তফাৎ মল্লিক দের বাড়ি । এখন হঠাৎ করে কেউ আসবে না যদিও আসে আমি বাড়ির কর্তা কৈফিয়ত দিতে হবে না কাউকে ।
রান্না ঘরের কপাট হা করে খোলা ।গরম মশলা পিষছিলো কানন ডিমের ঝোল এর জন্য । আমি ধূতি কে লুঙ্গির মতো পেঁচিয়ে ভাড়াটেদের রান্না ঘরে উঁকি মারলাম । হুড়োহুড়ি করে কাজ করার জন্য কানন পেঁচিয়ে রেখে ছিলো শাড়ি । আমাকে দেখে কাপড় ঠিক করার জন্য উঠে দাঁড়ায় । ছেঁড়া ব্লাউজ ঢাকছে ।শাড়ি দিয়ে গা ঢেকে ব্যসত ভাবে একটা পিড়ি এনে আমাকে বসতে দিল ।সমীহ করলো বাড়ির মালিক কে ।
কানন জিজ্ঞেস করলো , একলা ভালো লাগছে না মাষ্টার বাবু /
আমি বললাম ,তোর একলা থাকতে ভালো লাগে /
কানন ভিরিমি খায় । খাপছাড়া লাগে মালিকের গলা ।
কানন বলে , আমি আর একা থাকি ক ই মাস্টার বাবু । সারাদিন তো কাজ করেই চলে যায় ।
আমি প্রশ্ন করলাম ,তোর আর কে কে আছে রে কানন /
কানন বলে , স্বামী আছে । দুটো বাচ্চা আছে । একটা ছেলে একটা মেয়ে ।
আমি আঁৎকে উঠলাম ,এ্য , তোর বিয়ে হয়েছে /সে বেটা কি করে /রোজগার করে না ভমভম করে , অকরমন্য শয়োর /
কানন বলে , আমার সোয়ামী শুয়ে বসে খায় না বাবু ।জাল দিয়ে মাছ ধরে খাল বিলে ।মাছ বেচে । আপনি জানেন না মাস্টার বাবু /
আমি বললাম , আমি তো কিছুই জানি না । আমার ঘরের বাইরে কে কি কাজ করে তার খবর রাখি না । এতো খবরে আমার কি কাজ বল ।
কানন বলে ,সে তো ঠিক বাবু । একটা কথা বলি মাস্টার বাবু , বৌদি না আসা পর্যন্ত আপনি মেসের বাবুদের সঙ্গে খান । পুরুষ মানুষ রেঁধে খেলে খারাপ লাগে । আমি ও এ কয়দিন বামুনের সেবা করার সুযোগ পাবো ।
আমি হালকা শ্বাস ছেড়ে বললাম ,তা হয় না রে কানন । তুই যে ছোট জাত । আমার বৌ এর জাত যাবে । দেখছিস না কেমন সূচি বায়ু /টের পেলে আমাকে গরম জলে সিদ্ধ করে শুদ্ধ করবে ।
মুখে আঁচল চাপা দিয়ে খিলখিল করে হাসলে ও কানন থম মেরে যায় । উঁচু নিচু জাত নিয়ে কথা বললে বড়ো বুকে বাজে তার ।চুপ করে কি যেন ভাবতে থাকে ।পরে জিভ কেটে বলে ,আপনে বামুন , আমি জেলে ।ভুলে গেছিলাম বাবু ।ক্ষেমা করবেন ।
আমি বললাম , তুই এতো সুন্দর কেন বলতো /
কানন বলে , সোন্দর হ ওয়া কি দোষের বাবু /জেলে বলে গায়ের চামড়া কি দোষ করলো /
আমি বললাম ,জানি না । আমি যে জ্বলে পুড়ে মরছি ।
কানন বলে ,এক কাপ চা খাবেন বাবু ।চায়ে দোষ হয় না ।
আমি বললাম ,দিবি তো দে ,দোষ গুণ বুঝি না । আমি তো রাস্তার মোড়ে চা খাই ।সে আবার কোন এলাকার পুরুত মশাই /তোর কাজ যে বাড়লো । বাড়ি ফিরবি কোন বেলায় /
কানন বলে , ঠিক সময়েই ফিরবো মাস্টার মশাই ।
চা খেতে খেতে কথা হয় ।কাননের বসে কথা বলার সময় নেই । তবুও কথা বলি আমি রতন চক্রবর্তী আর রাঁধুনী কানন এর মধ্যে । হঠাৎ করে আমি জিজ্ঞেস করলাম ,তোর স্বামী তোকে কেমন আদর সোহাগ করে রে কানন /
প্রশ্ন শুনে রাঙ্গিয়ে উঠে কানন । হয়তো স্বামীর আদর সোহাগ এর কথা মনে পড়ে ।কানন লজ্জা পেয়ে বলে ,এ আর কেমন কথা মাস্টার বাবু /আপনি আপনার বৌকে আদর সোহাগ করেন না /
আমি বললাম ,দেখিস না আমার বউ রাতদিন রোগ আর ঔষধ নিয়ে কাটায় । আমাকে গন্য করে না । রাতদিন কেট মেট করে । খিটখিটে মেজাজ ।এতো কাজ করেও তুই তো দিব্বি আছিস।তোর এখনো কি সুন্দর শরীর । আমি ভাবতাম তোর এখনোও বিয়ে হয়নি ।
কানন এ কথায় মজা পায় না । আঁৎকে উঠে । শুধু প্রশ্ন করে , আমাকে নিয়ে ভাবেন বুঝি /
আমি বললাম , তুই মহাসুখে আছিস ।পর পুরুষ দের রান্না করে খাইয়ে সন্তুষ্ট রাখিস । তোর মতো বৌ পেলে আমি বর্তে যেতাম ।
কানন আঁৎকে উঠে । একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে । উল্টো রঙ মনে হয় পৃথিবীর । কানন ভাবে বাড়ি ওয়ালার অনেক টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি । টাকার বিছানায় আরামে আয়েসে সুখে দিন কাটাচ্ছে আর আমি ভাবছি কানন এর কথা । দুজনে দুদিকে অসুখী ।কানন এর স্বামী গরীব তাই বৌকে কাজে পাঠায় । একজনের বৌ এর খিটখিটে মেজাজ আর একজনের স্বামীর পশু সুলভ আচরণ ।একপেট মদ গিলে অর্ধেক রাতে শুরু করে বেদম মার । কলোনীর মানুষ রা ছুটে আসে তাদের থামাতে ।ফরসা রঙ কালি করে রোজগার করেও শান্তি পায় না কানন ।
কানন জিজ্ঞেস করে , মাস্টার বাবু কি ভাবছেন /
আমি বললাম , কিছু না । নিষ্ঠুর ভগবান আমাদের আমাদের কেমন যাতাকলে পিসছেন । তুই আমি কেউই বাদ নেই ।তুই ভাবছিস আমি সুখী আমি ভাবছি আর আমি ভাবছি তুই সব কিছু ফাঁকা । সুন্দর চেহারা সাজানো গোছানো বাড়িঘর নিয়ে আমরা দুঃখ ভুলে থাকি ।তুই আর আমি কলের পুতুল ।
ঐ যেমন সরিষা তিল চিবিয়ে তেল বানায় ব্যপারী ।তিল তেল সরিষার তেল হয় কিন্তু তিল সরিসার বারোটা বাজে । আমার ও ঠিক সে দশা ।
************************
গতরাতে আমার মনে ছিল শিউলির ঘ্রাণ ।শারোদোৎসভ এর বাজনা বাজাচ্ছিল হৃৎপিণ্ড । অনেক হাল্কা লাগছিলো নিজেকে । হয়তো স্বপ্ন দেখেছি নতুন কিছু । কাননের সাথে পরিচয় আলাপ যা হয়েছে দৈহিক ঘনিষ্ঠতার কথা বলতে কয়েক দিন পর লজ্জা লাগবে না । মনে মনে ভাবছি এ লোকালয় ছাড়িয়ে ও যাবার সময় আমি ওর পিছু নেবো ।তার বস্তি ঘরে পৌঁছবার আগেই পাহাড়ীদের ট্্ ঘরের মাচায় নতুবা কারো খামার বাড়িতে অন্তত কিছু ক্ষনের জন্য মিলিত হবো দুজনে ।যে সুখ তার স্বামী দেয়নি যে সুখ আমি আমার স্ত্রীর কাছে পাইনি দুজনের দুজনের কাছ থেকে চরম সুখ ভোগ করবো । অঘটন যাতে না ঘটে সে দায়িত্ব আমার ।কাননের পরতি আমার যে প্রীতি ভালবাসা জন্মেছে তাকে রুখে দেবার সাহস সাধ্য আমার স্ত্রী বা কাননের স্বামীর নেই ।
কানন এর দিয়ে যাওয়া চা বিস্কিট তৃপ্তি করে খেলাম । একটা সোনালী আস্তরন যেন আমার ছন্নছাড়া বাড়িটায় ।তার পায়ের আওয়াজ মনে হয় বাঈজীর নূপুর এর ঝুম ঝুম আওয়াজ । কাননের গলায় পল্লী গীতি যেন বিখ্যাত নায়িকাদের পুরুনো বিরহের অভিনয়ের সীন ।
রোজগার মতো বাসনধোয়া ,কলচাপা উঠোনে ঝাঁট দেবার শব্দ কানে আসে এখন আমি না দেখেই বুঝতে পারি কানন কোথায় কি কাজ করছে ।আজ ওকে বলেছি আমার রান্না করে দিতে ।বৌ আসবে আগামী কাল । অন্তত একটি দিন ওর হাতের রান্না খেতে রুচি বোধ করছি ।পরের টা পরে হবে । আমার রান্না করার ভার দেবার জন্য ও ভীষণ খুশি । কোন শিষ্টাচার ব্রাহ্মন তার হাতে খেতে চেয়েছে ওতে সে বর্তে যায় । কোমর কষে যত্নের সাথে রাধলো কয়েক পদ তরকারি ।
ব্যঙকের বাবু বাবুরা অফিসে চলে যাবার পর আমাকে খেতে ডাক দেয় কানন । আমি ও নাচতে নাচতে গেলাম ভাড়াটেদের মেসে ।দেখি কানন ঘর ভালো করে ধুয়ে সাফ করে ঝকঝকে তকতকে করে রেখেছে।মাজাঘষা ঝকঝকে কাঁসর থালায় আমার খাওয়া নিয়ে বসে আছে ধীবর কন্যা । শাড়ির আঁচলে মোছা পিড়িতে গোগ্রাসে গিলতে লাগলাম সুখাদ্য পদ গুলো । আমাকে খাইয়ে তৃপ্তি বোধ করছিলো সে ।তার চেহারায় তখন মনে হচ্ছিল দুষ্টু প্রজাপতি উড়ছে ।মুখ ধুতে এঁটো হাতে আমি বাইরে গেলাম । আমার এঁটো বাসন পরিস্কার করছিল কানন । বাইরে কে এলো গেলো নজর দেবার সময় আমার ছিল না । কাননের দিকে তাকিয়ে বললাম , তোর বাড়ি যাবো একদিন ।
কানন হাসলো । মুখে অস্পষ্ট স্বরে বলল ,বেশ তো ।যাবেন বলেছেন যাবেন মাষ্টার বাবু । আমার দিব্বি ।
আমি অধৈর্য হয়ে বললাম , আজকে যাবো ।তোর পিছনে পিছনে । তোকে আমি ভালবাসি কানন । তুই আমাকে ফিরিয়ে দিস না ।এই পাষন্ড লোকসমাজ কে আমি ভয় করি না ।তোর স্বামী জানতে পারবে না । কথাটা বলে কাননের উত্তরের অপেক্ষা না করে আমি আমার ঘরের দিকে র ওনা দিলাম ।
***********************
সামনে দাঁড়িয়ে আছে আমার বৌ । ভিরমি খেলাম ।ওর তো আগামী কাল আসবার কথা । এজন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না । বৌয়ের কটমট চাহনীর দিকে তাকাতে না পেরে আতম সমর্পণ করলাম নিজেকে । এবার তাকালাম কানন এর দিকে ।সে মুখে আঁচল চাপা দিয়ে খিলখিল করে হাসছে ।এ ঘটনায় বুঝতে পারলাম এ নিয়ে কানন এর মনে কোন দাগ পরেনি । কেননা আমার মতো বহু সুপুরুষ ওর দেহ ভোগ করতে রোজ প্রেম ভালবাসার কথা বলে ,সে গা করে না । মনে মনে হাসে । আমাকে ও সে কামুক দামড়া মনে করেছে হয়তো । কানন কে দেখে মনে হলো এমন ঘটবে সে জানতো । আমার বৌ ফিরে আসায় তার কোন লাভ ক্ষতি হয় নি ।
আমার বৌ কাননের দিকে তাকিয়ে বললো , আমার বাড়িতে আর আসবি না ।অন্য কোনো জায়গায় কাজ দেখ ।ব্যঙক বাবুরা নিজেরাই রেঁধে খাবে । এবার আমার দিকে তাকিয়ে বৌ বলে , নিজের ইজ্জত রাখতে শিখলে না আবার বামুন বলে দাবি করো ।এতো পড়েছো শিখেছো কে ভদ্র ঘরের মেয়ে কে বেশ্যা মাগী তাও চিনলে না ।
কানন কিছু বলতে চাইলো , আমি কিছু বলতে চাইলাম তখনি পানক সাপের মতো ফোঁস করে উঠলো আমার বৌ ,চোপ । একদম চুপ । বেশি কথা বললে মানুষ ডেকে মালাবদল করিয়ে দেবো ।
আমার অবস্থা , ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি ।
আমার বৌ আবার বলে , ওকে একশো টাকা দিয়ে দাও রান্নার মজুরি ।
কানন জিগ্গেস করলো , আপনার জাত যায়নি তো বাবু /আমি ছোট জাতের মেয়ে যে ।
আমার বৌ বললো ,সে সব আমরা দেখবো বুঝবো । তোকে ফোড়ন কাটা মোড়লি করতে হবে না । এঁটো বাসন মেজে রেখে যা । খবরদার ,কাক পক্ষীতে যাতে জানতে না পারে তোদের নসটামীর কথা ।
এবার বৌ আমার দিকে তাকিয়ে বলে তোমার জাত গেছে পেট ভরেছে । বিকালে নাপিত ডেকে চুল দাড়ি কামিয়ে নিও ।
বারান্দায় নিজের থাকবার ব্যবসহা করে নিও । খবরদার আমার বিছানায় আসার চেষ্টা করো না ।হাড় বজ্জাত লম্পট পুরুষ ।হাড় হাড়ামি ।যে পাতে খায় সে পাত নষ্ট করে ।
0 মন্তব্যসমূহ