হে মায়াময় বিষাদ :ঝুমুর পাণ্ডে
তিল
অনেক দিন পর প্রেমে পড়ল
মাঝবয়েসী সুবল
হাঁ, প্রেমে পড়ল এক বানভাসি মেয়ের
মেয়েটার গালে নয়, চিবুকেও নয় কপালে একটা বড় তিল ছিল। সেই বানভাসি মেয়েটার কথা
ওর কপালের সেই তিলের কথা ভাবতে ভাবতে অনেক দিন পর আকাশে চাঁদ দেখে সুবল
দেখে বৃষ্টির ধারা....
মনটা যেন কলকলিয়ে নাচে....
কিন্তু মেয়েটা আবার একদিন ভেসে গেল...
এখন সুবলের মেয়েটার কথা নয় শুধু তিলটার কথাই মনে পড়ে....
ধর্ষণ
ধর্ষণের প্রতিবাদ হচ্ছিল
গলায় ঝুলানো সবার প্লেকার্ড
পেছনে ব্যাপার.....
একজন ছোট নেত্রী খুন সুন্দর ভাষণ দিচ্ছিলেন মাউথ পিস হাতে
মাঝে মাঝে শ্লোগান....
মিডিয়া আসতেই বড় নেত্রী
প্রায় কেড়ে নিলেন মাউথপিস
সংবাদ পত্রের পাতায়, টিভির পর্দায় চোখ
আহা কত রকম ধর্ষণ যে হয়....
বাদল দিন
বিষণ্ণ বাদল দিন নিয়ে
কবিতা লিখতে বলেছিলেন
এক বিশিষ্ট পত্রিকা সম্পাদক কিন্তু কবির বার বার সেই
রক্তাক্ত মাঠটার কথাই
মনে পড়ছিল
যেখানে ধষরিত হয়েছিল
কাদের মেয়ে? কাদের বউ? কাদের ঠাকুমা?
আর কাদের ছেলে? কাদের পতি? কাদের বা দাদু ঠাকুদা?
বাদল দিন গড়িয়ে যায়
কলম হাতে বসে থাকেন কবি....
কাঙাল
দু হাত পেতে বসেছিল
এক কাঙাল
তারপর কখন জানি ঘুমিয়ে পড়েছিল
এক যুগ পর জেগে উঠে দেখল দুহাত ভরা মনি মানিক্য
কিন্তু ছুঁতে গিয়ে দেখে
সেসব কবেই মাটি হায় গেছে....
হে মায়াময় বিষাদ
(এক)
ও ফাগুন কেন আমায়
রাঙিয়ে ছিলে ফুলে
জানো নাতো আগুন ছিল
ওই কৃষ্ণচূড়ার ফুলে....
(দুই)
সারাদিনই বলি
তবে রাত যখন গভীর হয়
তখন তোমার সঙ্গে
আরও বেশি বেশি কথা বলি!
(তিন)
আমারও ঈষা আছে
তবে সেতো শুধু প্রেমে...
(চার)
আমার ভেতর আরেক আমি
বড় কাঁদে গো
বড় কাঁদে
সারা রাত জেগে জেগে কাঁদে
(চার)
মৃত্যুর মতো সুন্দর কিছু হয় না
তবু মৃত্যুর কথা ভাবলেই
কেন শিউরে ওঠে মানুষ!...
(পাঁচ)
মৃত্যু তোমার অপেক্ষা করি
কিন্তু জ্বলতে আমার ভয়
মাটির নীচে ভয়ে থাকতে ও
কাক পক্ষি ছিঁড়ে খাবে
তাও নৈব নৈব চ
এ দেহ লইয়া আমি
হায় কি যে করি?!!!
(ছয়)
বুকের ভেতর সহস্র ঢেউ তুলে
দহন কথা পদ্ম হয়েই ফোটে...
হে মায়াময় বিষাদ
(এক)
আমার কষ্টের ঘরের তো
বেড়াও নেই
দরজাও নেই
নেই একটা জানালাও
তবু কেন যে বেরোতে পারি না আমি?
(দুই)
কষ্টের কুন্দল পরি কানে
গলায় পরি বিষাদের চন্দ্রহার
দু:খের মকর মুখ বালা
দুহাতে আমার
কপালে বাথার টিপ
পায়ে যন্ত্রণার নুপুর
রুণুঝুণু বাজে
দেখ আহা.....
(তিন)
হে কষ্ট তোকে আমি ধারণ করি
হে কষ্ট তোকে আমি বহন করি
হায়ー কত সহস্র, কত কোটি কোটি
যোজন পথ
(পাঁচ)
বুকের ভেতর সহস্র ঢেউ তুলে দহন কথা পদ্ম হয়েই ফোটে...
(ছয়)
আমাকে আর জড়িয়ে থেকো না
ছেড়ে যাও ছেড়ে যাও
হে মায়াময় বিষাদ...
(এক)
তুমি আসবে আমি জানতাম
কিন্তু আমার সেরকম কোনও প্রস্তুতি ছিল না
তবে আমি কি জানতাম বলো হাজার বছর থেকে যার অপেক্ষা করছি
তুমি সেই.....!!!
(চার)
নদীর ধারে বসেছিলাম
সূর্য তখন রঙিন হয়ে ডুবছে
পাখিরাও সব ফিরছে
ভেবেছিলাম চলেই যাব
তখনই সূরযের রঙে
রঙিন হয়ে তুমি এলে....
(দুই)
তোমার কথা ভাবলেই
আমার দুচোখে জল আসে
আর আমি ওই জল
ছড়িয়ে দিই
ভালবাসার গাছেরা
যেখানে জড়াজড়ি করে আছে...
(পাঁচ)
আকাশে যখন তারারা জ্বলে
পাশ ফেরে চাঁদ
পাখিরাও ঘুমিয়ে পড়ে
ঘুমোয় মব মানুষ-মানুষী
গাছ-গাছালি,বনজঙ্গল,
মরু, পাহাড়...
আমি তখন অনেক অনেক
দূর থেকে তোমাকে ছুঁয়ে থাকি...
(তিন)
তুমি যেদিন ফিরে যাচ্ছ
তোমার সেই বসন্তের দেশে,
তখন ঘোর সন্ধে
পাখিরা তখন ঘরে ফিরছিল, আকাশে ছিল ডুবন্ত সূর্যের
রক্তিম আভা....
আরও অনেক কিছুই ছিল
আমি কিন্তু কিছুই দেখছিলাম না শুধু কাঁদছিলাম
হ্যাঁ শুধু কাঁদছিলাম ঝর ঝর করে ওই কান্নার জল এখনও লেগে আছে
আমার চোখে ওটাই কখনও কখনও
গহীন রাতে বৃষ্টি হয়ে ঝরে
স্বপ্ন কবিতা
(ছয়)
কেউ কাউকে আটকে রাখে না আমরা নিজেরাই কখনও
আঠার মতো আটকে যাই...
(সাত)
ভাবি তোমাকে ফোন করব
ওই সময় বাতাস হয়ে
তুমি আমার কানের কাছে অনর্গল কথা বলো!
কখনও ভাবি ভিডিও কল করব তখন তুমি আমার সামনে এসে দাঁড়াও
আর আমি তখন নির্বাক হয়ে
বসে থাকি। বসেই থাকি...
0 মন্তব্যসমূহ