প্রতিমা দেববর্মার কবিতা

প্রতিমা দেববর্মার কবিতা

দেশভাগ

 
 সীমানায় প্রাচীর গড়ে ওঠে  দেশভাগের সুবাদে
 হিন্দুও মুসলিম,শিখ রেষারেষিতে , উত্তাল ভারত ভূমি বিষাদে।
 রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে  ভাগ হয় প্রথম পাঞ্জাব ও বাংলা

 ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে বিহার উড়িষ্যা বাংলা ।
লক্ষ শহীদের  রক্তে হয়েছিল  কলকাতা রাঙ্গা 
 শপথ নিয়ে সব  একসাথে হও আগোয়ান
করোনা আর দাঙ্গা ।
 ওরা এক কোটি ৪০ লক্ষ  ওপার থেকে এপারে আশা  বিলিয়ে দেওয়া প্রাণ
 দেশের জন্য যারা নির্দ্বিধায়  দিয়েছিল  জীবন বলিদান।
 জাতি,ধর্ম  বিদ্বেষে  সোনার বাংলা হয়েছিল  ক্ষত বিক্ষত
পাকিস্তান ও পাঞ্জাবে  হয়  প্রচুর শহীদ  শত শত নারী যত।
 রেডক্লিফ এর সীমানা নির্ধারণ ছিল প্রথম ভুল 
 দেশের অর্ধ ভাগ পাঞ্জাব  ও পাকিস্তানের দরুন  দিতে হয় ভুলের মাশুল।
 মুসলিমের দাবি তাজমহল, হিন্দু র সিন্ধু
 দেশের সমস্ত সম্পদের ভাগাভাগিতে দৃশ্যমান           জনগণের রক্তবিন্দু ।
 হিন্দু,মুসলিম,শিখের রক্তে  সিক্ত শহর  কলকাতা 
 কাঁটাতারের চিহ্ন আজও  আছে বাচ্চা,মহিলার  হৃদয়ে গাঁথা।
পৃথিবী স্মরণ করবে  বীরদের বীরত্বগাঁথা,রইবে সবার অন্তরে 
 তোমাদের বলিদান স্মৃতি অম্লান  থাকিবে 
 এই জগৎ সংসারে।।

আত্মজা 

 
 মায়ের কোল আলো করে জন্মিল মেয়ে
 হরষিত সকলে তোর মুখপানে চেয়ে l
সংসারে উঠে আনন্দের ঢেউ, তুই যে রাজ নন্দিনী
 তোকে পেয়ে হলাম ধন্য,জীবন অঙ্গে প্রাণ প্রবাহিনী।
 ধীরে ধীরে বড় হল আদরের রাজকন্যা
 এ দুনিয়ায় সবার মাঝে তুই যে আমার অনন্যা।
 তুই কাঁদলেই জীবনে চলে আসে বন্যা
 তুই হাসলেই হরষিত ভুবন, আমার সাধের কন্যা।
 তোকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি সকাল থেকে রাত্রি
 সদা যেন হতে পারিস' সবার স্নেহের পাত্রী।
  তোর জন্য দিতে পারি  সকল সুখ বিসর্জন
 তোকে নিয়ে সুখের তরীতে বাসবো মোরা সর্বক্ষণ।
তোর জন্য পারি দেব সাত সমুদ্র, তেরো নদী
 আঁকতে পারি বিশাল আকাশ ভাসতে তুই চাস যদি।
 ফুলের রেনু মাখিয়ে গায়ে  দেবো তোমায় রাঙ্গিয়ে
 সোহাগী গো সোহাগে তোমায় রাখবো সাজিয়ে।
 আমার বুকে আগলে রাখবো তোকে সদা আমি  
 চিরদিনই ভালো তোকে  রাখে যেন অন্তর্যামী।।

বাবা

 জীবন চলার পথে বাবা - ই পরম গুরু
 বিশ্বটাকে প্রথম দেখা বাবার চোখেই শুরু।
 বাবার স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসার খনি 
 বাবা বিনা আমি যেন ধন হারা ধনী ।
 বটবৃক্ষের ছায়ার মত মাথায় তুমি থাকো
 পথ প্রদর্শর্কের  মত সদা আগলে রাখো।
 জীবনের প্রথম পথ চলা ও আবদারের পাত্র
 নিঃস্বার্থে মেটান শখ, সন্তানের নিরাপদ আশ্রয় পবিত্র l
 উনি  হলেন শিক্ষার আলয়, আছেন হৃদয় জুড়ে
 দেয় না বুঝতে অভাব অনটন হাসিমুখে বাড়ি ফিরে।
 সূর্যের তাপ মাথায় শয়ে অর্থ সঞ্চয়ে রত
সন্তানের আবদার মেটাতে  সদা চিন্তায় মত্ত।
 প্রথম বাবা ডাক শুনে মন প্রাণ নেচে ওঠে
 মরুভূমিতে মনে হয় পদ্ম কলি ফোটে।
 শতশাসন সত্বেও নিবিড় ভালবাসার আঁধার,
 সাধারণ হয়েও তুমি অসাধারণ আমার।
 আশা,তুমি, ভরসা তুমি ভালোবাসার ভান্ডার
 আকাশের মত ছাদ তুমি করুনার পাহাড় l
 এ জগতে তোমার মত অভিভাবক নাই
 তাইতো সারা জীবন তোমার পরশ যেন পাই।

মা 

 দয়াবতী,দরদিনী,মা জগতের শ্রেষ্ঠ
 জন্ম নিয়েছি মায়ের তরে দিও না মা কে কষ্ট।
 এই দুনিয়ায় সেই হলো সত্যি কারের মা
 সন্তানেরই সুখে যে হয়  সুখের প্রতিমা।
 আমার মুখে মা শব্দ শুনেছিলে যখন
 আদর করে কোলে নিয়ে চুমু খেয়েছিলে তখন।
 আঙ্গুল ধরে প্রথম তুমি হাঁটা শিখিয়েছিলে
 শত দুষ্টামি করার পরেও
 অভিমান গিয়েছিলে ভুলে।
 জগতের আলো দেখেছি মাগো আমি তোমার দ্বারা
 স্থান দিয়েছি হৃদয় আঙ্গিনায় সবার চেয়ে সেরা।
 মা যে মোর স্নেহময়ী, ক্ষুধা,তৃষ্ণার জল
ব্যর্থ জীবনে,ক্লান্ত জীবনে, ছায়া দেয় মায়ের আঁচল।
 অসুস্থ তায়,দুঃখ, কষ্টে শিয়রে হাত পাই ,                       বিশ্ব ভুবনে কারো সাথে  তুলনা তোমার নাই।
 তুমি ছাড়া বুঝবে না কেউ মনের দুঃখ ও প্রয়োজন
 তাইতো তুমি আমার নিকট সদাই  প্রিয় স্বজন l
 মা ডাকে কেউ দেবে না সারা, তুমি না থাকলে               মৃত্যুর পরেও ফিরতে চাইবো মাগো তোমার কোলে।।


প্রেম

 কে গো তুমি অপরূপা,রূপসী সুন্দরী
 চোখ দুটি টানা টানা যেন মনোহারি।
 বন্ধু আমার হবে নাকি, এসো একটু আলাপ করি
 করোনা আর বাহানা, ওগো দিও না আর আড়ি।
 আমি চাই তুমি আমারি প্রেমে পড়ো, মন প্রাণ উজাড় করে ভালোবেসে সতেজ  কর।
 পদ্মকলির ফুটেছে ফুল, হৃদয় সরোবরে
 দুজনে মিলে কাটব সাঁতার প্রেম নিবেদনের তরে।
 মন, আশা, বাসার সম্মিলিত রুপই হলো ভালোবাসা
 হাসি কান্না, দুঃখ, বেদনায় সৃষ্টি হয় নিরাশা। ভালোলাগা থেকে প্রেম, ভালোবাসা, প্রীতির  উৎপত্তি হয়
 ছোটা ছুটি র নেশা কেটে গিয়ে, ভালোবাসা অটুট  রয়।
 মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে যেমন নিঃশ্বাস  ।ভালোবাসাকে টিকিয়ে রেখে তেমন বিশ্বাস।
 যে ভালোবাসা আমাকে সারা জগৎ ভুলিয়ে দেবে
 সারাক্ষণ তুমি শুধু আমাকে ভালবাসতে ব্যস্ত থাকবে।
 সত্যি বন্ধু হয়ে তুমি থাকবে আমার সাথে
 চিরদিন থেকো পাশে,হাত রেখো হাতে।
 আকাশে চন্দ্র,সূর্য থাকবে যতদিন দুজনার মধুর মিলনে র  প্রেমের স্মৃতি থাকবে ততদিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ