নীলিমা দেবনাথ -এর কবিতা

নীলিমা দেবনাথ -এর কবিতা

আমি প্রেম হতে চাই  

আমি প্রেম হতে চাই
প্রেম হলেই সব নেওয়া যায়,
সবটা
সব রঙ নিয়ে পুরো আকাশ হতে
                                        চাই।
মানুষ নাম্নী কেউ নয়,মেয়ে মদ্দ নয়
কোনো কঠিন রিক্ত  নয়
পুরো সীমানা ছাড়িয়ে অঝোরে
বৃষ্টি হতে চাই
আহ্লাদে ধূয়ে যাব সমস্ত শুষ্কতা।

প্রেমে প্লাবন হব
পর্বতের ঢাল বেয়ে,
আনাচে কানাচে গিয়ে,
শিকড়  বাকড়ে আলিঙ্গনে
তৃপ্ত হব  তাই।
বনেদি পাঁচিল ভাঙলেই হবে সব একাকার।


ধারাপাত

তুই আমার স্বপ্নের আঁতুড়ঘর     
দোয়াত ঢেলেছি সব রঙের। 
দিয়েছি এঁকে যত সাধ আছে মনে।
ক্যানভাসে আকাশ এঁকেছি 
ডানাসুদ্ধ পাখি
যত কাটা আছে বেচে নিলাম,       
পৃথিবীর সব ফুল এঁকে দিলাম।
গলির অন্ধকারে ল্যাম্পপোস্ট দিলাম।
আমার জীয়নকাঠি তোর   
আমার ফাগুন ও তোর

আত্মজা

গহীন অন্ধকারে  করেছি ধারণ
দীর্ঘ অপেক্ষাতে শুনেছি অনুরণন ,
রক্তের ধারাপাতে করেছি উন্মোচন -
আমারই প্রতিমা।
তোর স্পর্শে, গন্ধে, স্নেহে আমি সম্পূর্না,
মা ডাকে জেগেছে প্রত্যয়।
জানিস,
আমি মৃত্যুকে জয় করেছি
তোর ছন্দে, তোর তানে
তোর প্রাণে আমি আছি
তোর মাঝেই আমি সিঞ্চিত 
তুই আমার পরিচয়।

ঝিঙেমাচা
 
বাবা ছিলেন শক্ত মাচা আমি ঝিঙেলতা ,
তার গায়েই ঢেলান দিয়ে,উপরে বেয়ে উঠা
অলস দুপুর ঘুমের ফাকি, গল্প আর ভাতঘুম,
গ্রীষ্ম  দুপুরে জলচর আমরা ডুব সাঁতারের ধুম।
বাবাই তো ছিলেন বর্ণবোধ আর অংকের ধারাপাত, আমার বাবা আমার হিরো আমার পৃথিবীর ছাদ।
কাটলে আমার পায়ের পাতা রক্ত ঝরে তাঁর বুকে,
কন্যা বলেই বাবার রাজ্যে ছিলাম এত রাজসুখে।
ঝিঙেমাচা ভাঙলো, আমি সবে বয়সে বারো,  
লতা মাটি একসা হল কার কিই বা এল গেল।
যুদ্ধে নেমেছি এখন আমি ফল ধরেছে গাছে,
এখন বুঝি যদি বা হারাই যদি হয় কিছু পাছে।
হাতড়ে ফিরি সেই শৈশব হারিয়ে গেছে খেই,
মাথার উপরে নিমের ছায়া এখন তো আর নেই।
যা শিখেছি তোমার কাছেই তোমিই আমার গুরু, আমিও হব শক্ত মাচা আমিও তো নই ভীরু।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ